Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সেমস্কুপ দ্বারা কিওয়ার্ড রিসার্চ টেকনিক

কিওয়ার্ড রিসার্চ বর্তমানে বহুল আলোচিত একটি বিষয় যা সরাসরি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ছাড়া যে কোনো কনটেন্ট বা আর্টিকেল, গুগলের টপ পেজে আনার কথা চিন্তাই করা যায় না। শুধু গুগলই নয়, অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোর ক্ষেত্রেও একই বিষয়। এগুলোর মধ্যে আছে বিং, ইয়াহু, ইউটিউব, আর আমাজন। যদিও কিওয়ার্ড রিসার্চ সম্পূর্ণ সার্চ ইঞ্জিনের সাথে এবং কনটেন্টের সাথে সম্পর্কিত, তাই কিভাবে প্রপার ওয়েতে কিওয়ার্ড রিসার্চ করা হয়, তার জন্য এসইও স্পেশালিস্টরা সবসময়ই কোনো না কোনো টুল্‌স বা ওয়েবসাইটের ওপর নির্ভর করে থাকেন। সেমস্কুপ তেমনই একটি ওয়েবসাইট যা আপনাকে দেবে সহজ পদ্ধতিতে কিওয়ার্ড রিসার্চ করার উপায়। সাধারণতঃ পেইড টুল্‌স বা সাইটের ওপর বেশি জোর দেয়া হয় কারণ সেখানে অনেক বেশি ফিচার আর অনেক সুবিধাদি পাওয়া যায়। কিন্তু নতুন সাইটের জন্য ফ্রি টুল্‌সের বিকল্প নেই।

সেমস্কুপ আসলে কি

 Semscoop আসলে একটি নামকরা ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠান যা সম্পূর্ণভাবে Ahrefs, Semrush, Google Trends, Google Adwords আর Alexa এর কম্বিনেশনে তৈরি। বিভিন্ন গ্রুপ টুলস অথবা ব্যক্তিগত ভাবে উপরের সব টুলস বা সাইটে একাউন্ট খোলা বা কেনা গেলেও সেমস্কুপ দিয়ে ফ্রিতেই প্রতিদিন keyword research করা যায়। আলেক্সা সাইটের ছবিটি দেখলে বুঝতে পারবেন যে সেখানে কি কি facility পাবেন।

দেখা যাচ্ছে, লাল বক্সের মধ্যেকার সবকিছুই premium ভার্সনের জন্য বা paid সিস্টেমের জন্য। আপনাকে ডলারের মাধ্যমে তাদের সাইটে একাউন্ট খুলতে হবে যা সাধারণতঃ half-yearly বা 1-year এর জন্য দেওয়া হয়। অবশ্য সবুজ বক্স করা সবকিছুই ফ্রিতে এনালাইসিস করা যায়। যদিও সেখানে আপনি keyword research করতে পারবেন না। আলেক্সাতে ফ্রিতে একাউন্ট খোলা যায় যা trial version নামে পরিচিত। এবার দেখা যাক সেমস্কুপের keyword research interface টা কেমন-

সিমপ্লি আপনাকে তাদের সাইটে যেতে হবে আর এরকম interface আসবে। আপনার নিশ বা সাইটের টপিক অথবা যে টপিক নিয়ে লেখালেখি করতে চান, সেটা লিখতে হবে। এরপর আপনার টার্গেটেড দেশ (যেমন- uk, usa, india, etc.) সিলেক্ট করে ডানপাশের ম্যাগ্নিফাইং গ্লাস বাটনে ক্লিক বা এন্টার চাপতে হবে। এক/দুই মিনিটের মধ্যেই পেয়ে যাবেন কাঙ্ক্ষিত লিস্ট। সেখান থেকে বিভিন্ন এনালাইটিক্যাল রিসার্চের পরে যে কোনো কন্টেন্ট লেখা শুরু করতে পারেন।

Semscoop এ একটা ইমেইল একাউন্ট দিয়ে ফ্রিতেই একাউন্ট খোলা যায়। ফ্রি একাউন্টে সব সুবিধাদি পাওয়া না গেলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশ উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে লং-টেইল কিওয়ার্ড রিসার্চ  আর কম্পিটিটিভ এনালাইসিসের সময়। যদিও আমি সাজেস্ট করবো রেজিস্ট্রেশন না করার জন্য, এতে কাজের গতি বাড়বে।

কিভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করা হয়

Semscoop সাইটে গেলেই আগের ছবির মত ইন্টারফেস চলে আসবে। এখন ধরুন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কিছু লিখতে চান বা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে কোনো আর্টিকেল ব্লগে পোস্ট দিতে চান। সেক্ষেত্রে, আপনার প্রথম কাজ হবে- সেমস্কুপ সাইটে যাওয়া। গুগল বা যে কোনো সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করুন।


ধরুন, আপনি সার্চ করেছেন- digital marketing seo। দেশ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন ইন্ডিয়া আর ভাষা হিসেবে ইংরেজি।

এবার, এন্টার চাপার পরে কিছু সময় অপেক্ষা করুন আর স্ক্রিনের বামপাশে লিস্ট দেখুন। Initial পর্যায়ে আপনাকে কিছু পপ-আপ মেসেজের মাধ্যমে সেমস্কুপ ব্যবহারের নিয়ম দেখানো হবে যা আপনি কেটে দিতে পারেন, কোনো সমস্যা হবে না।

নেটওয়ার্কের কোনো জটিলতা না থাকলে এবং আপনার বাসার ইন্টারনেট স্মুথ হলে, এক/দুই মিনিটেই নিচের ছবির মত ইন্টারফেস চলে আসবে। এই এনালাইসিসে কোনটি কোন কাজ করে তা বোঝার জন্য বিভিন্ন মার্কিং করে পাশে ছোট আকারে লেখা আছে।

একদম বামপাশে ফ্রি ৫০টি related keyword topics পাবেন। স্ক্রল করে নিচে নেমে দেখতে পারেন। তবে সেগুলো ক্লিক করলে কিছু সময় পরে সেটার এনালাইসিস করে দেখানো হবে এবং এভাবে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০টি সার্চ করতে পারবেন। উপরের উদাহরণে, ৪১ হলো keyword difficulty, ৭২% হলো গড় ডোমেইন অথোরিটি বা ডি/এ। ১৭ বছর আগের সাইট (শীর্ষ সাইট) যাতে ৬০০০ এর মত ব্যাকলিংক করা আছে।

এখন আপনি যদি এই কিওয়ার্ড নিয়েই লিখতে চান, তাহলে আপনার আর্টিকেলের ওয়ার্ড কাউন্ট বা শব্দ সংখ্যা হতে হবে ২৫৫০ বা তার বেশি। আর এই কিওয়ার্ড কেমন রেস্পন্স পাচ্ছে বা কেমন ভিজিটর আসছে, সেটা উপরের গ্রাফ থেকে আইডিয়া নিতে পারেন। দেখা যাচ্ছে, এই কিওয়ার্ডের জন্য বেশ ভিজিটর পাওয়া যায় আর সর্বোচ্চ ৫০০০ ভিউ এসেছে জুন মাসে।

Links profile tab এ ক্লিক করলে নিচের মত ছবি আসবে। এই ট্যাব থেকে আপনি জানতে পারবেন যে, সাইটে কতটি do-follow আর no-follow ব্যাকলিংক করা আছে। পাশাপাশি সাইটের DA/PA ও জানা যায়।


কন্টেন্ট এনালিসিস ট্যাবে ক্লিক করলে জানতে পারবেন, কন্টেন্টে main keyword কতবার ব্যবহার করা হয়েছে এবং seo বেস্ট প্র্যাক্টিস অনুযায়ী তা হেডার ট্যাগগুলোর মধ্যে আছে কি না। পাশাপাশি এটা আপনাকে আরো দেখাবে কন্টেন্ট লেংথ, অন-পেজ স্কোর, ইউআরএল/মেটা/টাইটেল/ডেস্ক্রিপশন এসবে কিওয়ার্ড এসেছে কি না।

শেষ ট্যাব বা সোশ্যাল এনগেঞ্জমেন্ট ট্যাবে ক্লিক করলে দেখতে পাবেন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থেকে কতটি লাইক এসেছে। সাধারণতঃ ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, আর পিন্টারেস্ট থেকেই ডাটা এনালাইসিস করে দেখানো হয়।

কিভাবে SEO কন্টেন্ট লেখা যায়

 সেমস্কুপ কিওয়ার্ড রিসার্চের মাধ্যমে প্রাপ্ত ডাটা দিয়ে অনেক ভালো মানের কন্টেন্ট লেখা সম্ভব। বিশেষ করে যারা নতুন সাইট খুলেছেন বা ব্লগিং করেন, তারা প্রায়ই বিভিন্ন টুলসের শরণাপন্ন হন। এবং অনেকেই afford করতে পারেন না। তাদের জন্য সেমস্কুপ হতে পারে একটা সুবর্ণ সুযোগ। যে কোনো কিওয়ার্ড রিসার্চ করে এই সাইট থেকে আপনি পেতে পারেন কাঙ্ক্ষিত শব্দের কন্টেন্ট বা আর্টিকেল। তবে SEO কন্টেন্ট লেখার জন্য কিছু টিপস follow করতে হয়। সেমস্কুপের আলোকেই নিচে সেগুলো দেওয়া হলো-

  1. যে কোনো কন্টেন্ট লেখার সময় কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি একটা বড় ব্যাপার। এটার উপরেই নির্ভর করে কিভাবে আপনি আপনার আর্টিকেলটি বাছাই করবেন। সংক্ষেপে একে KD বলা হয়। যেকোনো কন্টেন্টে KD দেখে নির্বাচন করতে হয় যে সেটা লিখলে র‍্যাংক করানো যাবে কি না। সাধারণতঃ ০-১০ হলো সবচেয়ে সহজ বা very low difficulty, ১১-২৫ হলো low difficulty, ২৬-৪১ হলো medium difficulty, ৪২-৬০ হলো high difficulty, এবং ৬১-১০০ very high difficulty। সেমস্কুপে এই KD বিভিন্ন কালারের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় যাতে Keyword analyzer রা সহজে বুঝতে পারে। Low difficulty গুলো গাঢ় সবুজ/সবুজ হয়ে থাকে, medium difficulty গুলো হলুদ/কমলা এবং difficult গুলো সাধারণতঃ লাল রঙের হয়ে থাকে।
  2. গুগলের পলিসি এবং এলগরিদম অনুযায়ী, যত বেশি শব্দের আর্টিকেল বা কন্টেন্ট, তত উপরের দিকের র‍্যাংকিং এ আসার সম্ভাবণা। গুগল সাধারণতঃ ৮০০-২০০০ শব্দের আর্টিকেলগুলো বাছাই করে আর র‍্যাংক করতে থাকে। কেউ যদি ৫০০০ শব্দের আর্টিকেল লেখে, গুগল সেটাও বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকে আর কম সময়েই র‍্যাংক বাড়তে থাকে। যদিও কন্টেন্ট বা আর্টিকেল যদি informative বা user-attractive হয়, অনেক কম শব্দের আর্টিকেলও র‍্যাংক করতে পারে। কারণ, quality is better than quantity।
  3. SEO content  বা article লিখতে গেলে সেমস্কুপের ইন্টারফেসে বিভিন্ন সাপোর্টিং কিওয়ার্ড আইডিয়া পাবেন। এক আইডি থেকে দিনে ১০টি সার্চ করা যায়। যে কোনো কন্টেন্ট লেখার আগে ভলিউম, সিপিসি, এবং পিপিসি একটা টেকনিক। নতুন সাইটে লেখার আগে সবসময় লো ভলিউম কন্টেন্ট বাছাই করতে হয়। ভলিউম বলতে এখানে সার্চ ভলিউম বোঝানো হয়েছে। লো ভলিউমের কন্টেন্ট তাড়াতাড়ি র‍্যাংক করতে পারে হরহামেশাই। আর রিসার্চের সময় লো ভলিউম কিওয়ার্ড আর হাই সিপিসি/পিপিসি পেলে তো কথাই নেই- সেটা দ্রুততার সাথে লিখে ফেলাই উত্তম।
  4. কিওয়ার্ড কে সবসময়ই টাইটেল, মেটা, এবং হেডারে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। এছাড়াও wordpress blog site হলে, AllinOne/Yoast/RankMath প্লাগিন ব্যবহার করে স্কোর করা যায়। এসব SEO plugin ব্যবহার করলে সেখানে ১০০ পর্যন্ত স্কোর দেখানো হয়। যত বেশি স্কোর, তত ভালো কন্টেন্ট।

সারকথা

সেমস্কুপ একই সাথে আপনাকে দেবে বিভিন্ন seo tools এর সুবিধাদি। সাথে আপনিও লাভ করতে পারবেন seo আইডিয়া আর কিওয়ার্ড রিসার্চ টেকনিক। অনেক ফ্রিল্যান্সার আর প্রযুক্তিবিদরা কিওয়ার্ড রিসার্চ নিয়ে কাজ করেছেন, করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে ডিজিটাল মার্কেটিং যত বাড়বে, কিওয়ার্ড রিসার্চ সেক্টরেও লোক বাড়বে। এখনই হয়ে যান কিওয়ার্ড গুরু আর শুরু করে দিন আপনার ক্যারিয়ার। ধন্যবাদ সবাইকে।




Post a Comment

1 Comments

  1. good post for beginners and keyword researchers. informative article for seo. keep it up dear.

    ReplyDelete